ঢাকা , বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫ , ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​অভিযোগ ভিত্তিহীন, সারজিসের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি ছাত্রদলের

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৭-০৩-২০২৫ ০৭:৫৭:১৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৭-০৩-২০২৫ ০৭:৫৭:৫০ অপরাহ্ন
​অভিযোগ ভিত্তিহীন, সারজিসের বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি ছাত্রদলের ​ছবি: সংগৃহীত
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘটিত অপ্রীতিকর ঘটনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা সারজিস আলম ছাত্রদলকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রদল। সারজিসের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

তারা বলেন, গত ৫ মার্চ এনসিপির সারজিস আলমের সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। দেশের যে কোনো জায়গায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছাত্রদলের নাম জড়ানোর একটি দুরভিসন্ধিমূলক প্রবণতা লক্ষ্য করছি। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। 

রাজধানীর নয়াপল্টনের বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলার কনফারেন্স রুমে শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ছাত্রদল নেতারা।

লিখিত বক্তব্যে ছাত্রদল জানায়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত ঘটনার প্রকৃত বৃত্তান্ত হলো- বুধবার রাত দশটার পরে সারজিস আলম তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বসুন্ধরা এলাকার ঘাটপাড় থেকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নম্বর গেটের দিকে আসেন। এ সময়ে ৮ নম্বর গেটে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আড্ডারত ছিলেন। গেটের সামনে সারজিস আলমের উপস্থিতি দেখে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সারজিস আলমকে উদ্দেশ করে ‘ঢাবির সিন্ডিকেট ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ স্লোগান দেয়।

উল্লেখ্য, নবগঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যথাযথ মূল্যায়ন না করার অভিযোগে উক্ত ছাত্র সংগঠনটির কতিপয় ক্ষমতাশালী নেতা আত্মপ্রকাশের দিনেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মধুর ক্যান্টিনে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এনসিপি এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের কথা দেশের সব রাজনীতি সচেতন মানুষ অবগত। পূর্বের রেষারেষির জের ধরেই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সারজিস আলম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। এ সময়ে সারজিস আলমের সঙ্গে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

ছাত্রদল মনে করে, সারজিস আলমের সাথে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরোধের সূত্রপাত নাগরিক পার্টি এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মধ্যকার ঢাবি বনাম প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে চলমান অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সারজিস আলম এ ঘটনাকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার জন্য ছাত্রদলকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। তার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত। সারজিস আলম তার পোস্টে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসী, দুষ্কৃতকারী এবং টোকাই’ হিসেবে উল্লেখ করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অপমানিত করেছেন। আমরা তার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। সারজিস আলমের বক্তব্যে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন ত্যাগকে মর্যাদাহানি করা হয়েছে। আমরা তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি।

ছাত্রদল সভাপতি রাকিব বলেন, ঘটনাস্থলে ছাত্রদলের কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল না। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও ঘটনাস্থলে ছিল না। সারজিস আলমের সাথে ছাত্রদলের কোনো বিরোধ হয়নি। তবে উল্টো সারজিস আলমের শোডাউনে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং জুলাই-আগস্টের গণহত্যার আসামিদের দেখা গেছে। এভাবেই এনসিপি ও তাদের ছাত্রসংগঠনে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন হচ্ছে। আমরা নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের নিন্দা জানাই।

তিনি আরও বলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সারজিস আলমের বিরোধের মধ্যে কোনো ছাত্রদল নেতাকর্মীর উপস্থিতি ছিল কিনা আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার কাজ চলছে। যদি ছাত্রদলের কারও কোনো ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা থেকে থাকে, তাহলে আমরা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। একইসঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার দায় ছাত্রদলের ওপর চাপানোর কৌশলের বিরুদ্ধে আমরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ